পেয়ারা খাওয়া যত উপকারিতা ও পুষ্টি গুণ
পেয়ারা খাওয়া যত উপকারিতা ও পুষ্টি গুণ পেয়ারা আমাদের দেশের একটি সহজলভ্য ও জনপ্রিয় ফল। বর্ষাকাল ও শরৎকালে বাজারে এর প্রাচুর্য দেখা যায়। ছোট-বড় সবার কাছেই পেয়ারা সমানভাবে পছন্দের কারণ এটি যেমন সুস্বাদু, তেমনি অত্যন্ত,
![]() |
suraz |
পুষ্টিকর। এতে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ, আঁশ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের জন্য অপরিহার্য।প্রাচীনকাল থেকেই পেয়ারা স্বাস্থ্যরক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, হজমশক্তি উন্নতকরণ। এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
পেজ সুচি পত্রঃ পেয়ারা খাওয়া যত উপকারিতা ও পুষ্টি গুণ
পেয়ারা ক্যানসার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে
পেয়ারা ভিটামিন C, ভিটামিন A, বিটা-ক্যারোটিন এবং ফ্ল্যাভোনয়েডে সমৃদ্ধ। এগুলো শরীরে ফ্রি-র্যাডিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাব কমিয়ে ক্যানসার সৃষ্টির ঝুঁকি হ্রাস করে।পেয়ারা বিশেষভাবে লাইকাপিন নামক উপাদানে ভরপুর, যা প্রোস্টেট, স্তন ও পাকস্থলীর ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। পেয়ারা প্রচুর ফাইবার সরবরাহ করে, যা হজমে সহায়তা করে।
👉আর পড়ুনঃ চোখের নিচের কালো দাগ দূর করা ঘরোয়া উপাই
এবং কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।ভিটামিন C ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে, ফলে শরীর সহজে রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়।পেয়ারা শরীরে প্রদাহজনিত প্রতিক্রিয়া হ্রাস করে, যা ক্যানসারের বিকাশের একটি বড় কারণ হতে পারে। এবং নিয়মিত পেয়ারা খাওয়া শরীরকে ভেতর থেকে শক্তিশালী করে এবং ক্যানসার প্রতিরোধে প্রাকৃতিক সুরক্ষা প্রদান করে।
পেয়ারা খাওয়া যত উপকারিতা ও পুষ্টি গুণ পেয়ারার বিভিন্ন ফাইটোকেমিক্যাল প্রদাহ (inflammation) কমায়। দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ অনেক সময় ক্যানসারের সূচনা করে, তাই পেয়ারা এ ঝুঁকি হ্রাস করে।নিয়মিত তাজা পেয়ারা খাওয়া, সালাদে বা জুস হিসেবে গ্রহণ করা ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।পেয়ারা ভিটামিন C-এ সমৃদ্ধ হওয়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ফলে ক্যানসার সৃষ্টিকারী ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে শরীর লড়াই করতে পারে।
পেয়ারাতে আছে মস্তিষ্ক ও স্নায়ু সুস্থ রাখার উপাই
পেয়ারা আমাদের দেশে খুবই সহজলভ্য একটি ফল, আর এতে আছে প্রচুর ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা মস্তিষ্ক ও স্নায়ু সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পেয়ারা ভিটামিন সি-তে ভরপুর। এটি মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন ভালো রাখে এবং স্নায়ুকে সুরক্ষা দেয়। ভিটামিন সি স্মৃতিশক্তি বাড়াতে ও স্নায়ুর বার্ধক্য রোধে সহায়ক।পেয়ারায় আছে লাইকোপেন, কেরোটিনয়েড ও ফ্ল্যাভোনয়েড যা স্নায়ুকোষকে (নিউরন) ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।এগুলো অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে মস্তিষ্ককে তরতাজা রাখে।পেয়ারা ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়ামের ভালো উৎস।
পেয়ারা খাওয়া যত উপকারিতা ও পুষ্টি গুণ পেয়ারা ভিটামিন বি৬ সমৃদ্ধ, যা স্নায়ুতে নিউরোট্রান্সমিটার" তৈরিতে সাহায্য করে।এটি মনোযোগ বৃদ্ধি ও মানসিক অবসাদ কমাতে সহায়ক।পেয়ারার ফাইবার রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণ করে, ফলে মস্তিষ্ক নিয়মিত পর্যাপ্ত শক্তি পায়।এটি স্নায়ুর দুর্বলতা কমায়।খাবার নিওম প্রতিদিন ১-২টি পাকা পেয়ারা খাওয়া যেতে পারে।সকাল বা বিকালে নাস্তার সময় খেলে সবচেয়ে ভালো ফল মেলে পেয়ারার জুস বা সালাদও খাওয়া যেতে পারে ইত্যাদি।নিয়মিত পেয়ারা খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে, মাথা সতেজ থাকে এবং স্নায়ু শান্ত ও কার্যকর থাকে।
ত্বক ও সৌন্দর্যে সহায়ক করে পেয়ারা খেলে
পেয়ারা খাওয়া যত উপকারিতা ও পুষ্টি গুণ পেয়ারা ভিটামিন C সমৃদ্ধ, যা কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে ত্বককে টানটান ও উজ্জ্বল করে তোলে।অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (লাইকোপিন, বিটা-ক্যারোটিন) থাকায় এটি ত্বকের ভাঁজ, বলিরেখা ও ঝুলে যাওয়া কমাতে সহায়তা করে।পেয়ারা ও এর পাতায় থাকা জীবাণুনাশক উপাদান ব্রণ কমায় এবং ত্বকের দাগ হালকা করতে সাহায্য করে।
এতে থাকা পানি ও খনিজ পদার্থ ত্বককে ভেতর থেকে হাইড্রেট করে রাখে, ফলে ত্বক নরম ও সতেজ দেখায়।পেয়ারার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট UV রশ্মির ক্ষতি থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেয়।পেয়ারা পাতার নির্যাস খুশকি কমায় এবং চুলের গোড়া মজবুত করে চুল পড়া রোধে সহায়তা করে।পেয়ারা নিয়মিত খেলে ত্বকের ভেতর থেকে পুষ্টি সরবরাহ হয়, ফলে কালচে দাগ বা পিগমেন্টেশন ধীরে ধীরে হালকা হয়ে ত্বকের রঙ সমান হয়।
পেয়ারা পাতার নির্যাস বা পেস্ট তৈলাক্ত ত্বককে ব্যালান্স করতে সাহায্য করে, ফলে ব্রণ ও ব্ল্যাকহেডস হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।এতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান ত্বকের র্যাশ, চুলকানি বা ইনফেকশন কমাতে সাহায্য করে।এবং পেয়ারা গুঁড়ো করে মধু বা দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে লাগালে মৃতকোষ দূর হয় এবং ত্বক হয় নরম ও সতেজ।
পেয়ারা খেলে হার্টের স্বাস্থ্যে ভালো রাখে
পেয়ারায় প্রাকৃতিকভাবে পটাসিয়াম এবং সোডিয়ামের ভারসাম্য রয়েছে। পটাসিয়াম রক্তনালীর মসৃণ পেশী শিথিল করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। উচ্চ রক্তচাপ কম থাকলে হার্টের উপর চাপ কমে।পেয়ারা উচ্চমাত্রায় ফাইবার সমৃদ্ধ। এই ফাইবার রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমাতে সাহায্য করে এবং ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বজায় রাখতে সাহায্য করে।
এবং যা হার্টের রোগের ঝুঁকি কমায়।পেয়ারা ভিটামিন সি এবং অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। এই উপাদানগুলো রক্তনালী ও হৃদপেশীর কোষকে ফ্রি র্যাডিকেল দ্বারা ক্ষতি হওয়া থেকে রক্ষা করে।পেয়ারার ফাইবার ও পটাসিয়াম ধমনীর দেয়ালকে নমনীয় রাখে, রক্ত সঞ্চালন ভালো রাখে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।পেয়ারায় কম গ্লাইসেমিক সূচক (Low GI) থাকে।
এবং এটি রক্তে চিনি নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকলে হার্টের উপর চাপ কম থাকে। পেয়ারায় উপস্থিত ফাইবার রক্তে চর্বি জমা কমাতে সাহায্য করে। এতে রক্ত স্রোত স্বাভাবিক থাকে, হার্টের উপর চাপ কমে। বিশেষ ক্ষেত্রে প্রতিদিন ১-২টি পাকা পেয়ারা খাওয়া হার্টের জন্য উপকারী।রক্তচাপ বা হার্টের সমস্যা থাকলে তা নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া উচিত।
পেয়ারা খাওয়া যত উপকারিতা ও পুষ্টি গুণ শেষ কথাঃ
পেয়ারা হলো প্রকৃতির একটি উপহার, যা স্বাদে মনোমুগ্ধকর এবং পুষ্টিতে অতুলনীয়।টি শুধু ক্ষুধা মেটায় না,বরং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখে, হজম শক্তি উন্নত করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। পেয়ারা শুধুমাত্র সুস্বাদু নয়, বরং এটি আমাদের শরীরের জন্য অসাধারণ পুষ্টিগুণ এবং স্বাস্থ্য উপকার নিয়ে আসে। হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কোষ্ঠকাঠিন্য, ত্বক ও চুলের যত্ন।নিয়মিত পেয়ারা খেলে শরীরের ভিতর থেকে সুস্থতা অনুভূত হয়, ত্বক উজ্জ্বল হয় এবং চুল মজবুত থাকে।
জ্যাম ফ্লোরা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url