আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত ১০টি গুরুত্বপূর্ণ গাছ

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত ১০টি গুরুত্বপূর্ণ গাছ আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা হলো প্রাচীন ভারতীয় চিকিৎসাবিদ্যার এক অনন্য ধারা, যার ইতিহাস হাজার বছরেরও বেশি পুরোনো। আয়ুর্বেদ শব্দটি সংস্কৃত ভাষা থেকে এসেছে।

যেখানে আয়ু মানে জীবন এবং বেদ মানে জ্ঞান বা বিজ্ঞান। অর্থাৎ, আয়ুর্বেদ হলো জীবনের বিজ্ঞান। এটি কেবল রোগ নিরাময়ের পদ্ধতি নয়, বরং শরীর, মন ও আত্মার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে সুস্থ ও দীর্ঘায়ু জীবনযাপনের কৌশল। 

পেজ সূচি পত্রঃ আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত ১০টি গুরুত্বপূর্ণ গাছ

নিম গাছের কি কি উপকারিতা জেনে নিন

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত ১০টি গুরুত্বপূর্ণ গাছ নিম গাছ (Azadirachta indica) আয়ুর্বেদ, ইউনানি ও লোকজ চিকিৎসায় বহু প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর প্রতিটি অংশ, পাতা, ছাল, ফল, বীজ, তেল ও ফুল স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং নানা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। নিমের পাতা ও তেল ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও ফাঙ্গাস প্রতিরোধ করে। ত্বকের সংক্রমণ, ঘা বা কাটাছেঁড়ায় জীবাণুনাশক হিসেবে কার্যকর।

ব্রণ, একজিমা, সোরিয়াসিস ও চুলকানি দূর করতে সাহায্য করে।নিমপাতার রস বা পেস্ট ত্বক পরিষ্কার রাখে ও দাগ কমায়।নিমের ডাল দিয়ে দাঁত মাজলে মাড়ি শক্ত হয় ও মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়।দাঁতের পোকা ও মাড়ির রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।নিমের পাতা রক্ত পরিষ্কার করে, ফলে ফোঁড়া, দাদ, চুলকানি ইত্যাদি কমে।শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, সর্দি-কাশি ও অন্যান্য সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।

কৃষি ও পরিবেশের  উপকারিতা:

নিমের তেল ও পাতা ফসলের ক্ষতিকারক পোকা দূর করতে ব্যবহৃত হয়।রাসায়নিক কীটনাশকের বিকল্প হিসেবে নিরাপদ।নিমের ধোঁয়া বা তেল মশা ও মাছি দূরে রাখে।নিমের পাতা ও ফল পচে সার হিসেবে মাটির গুণ বৃদ্ধি করে।নিম গাছ বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে, অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায় এবং ছায়া দেয়।

শতাবরি গাছের উপকারিতা সম্পর্কে  জেনে নিন

শতাবরি (Shatavari) গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Asparagus racemosus। এটি আয়ুর্বেদে বহু শতাব্দী ধরে মহিলাদের স্বাস্থ্যের জন্য এবং শরীরের সামগ্রিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।মাসিকের অনিয়ম, ব্যথা ও পিরিয়ড-সংক্রান্ত সমস্যায় উপকারী।মেনোপজের সময় গরম ভাব, রাগ, অনিদ্রা কমাতে সহায়ক।

শতাবরিতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরকে ফ্রি-র‌্যাডিকেল ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে।পেটের আলসার ও অ্যাসিডিটি কমাতে সাহায্য করে।গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ও অন্ত্রের প্রদাহ কমায়।স্ট্রেস ও উদ্বেগ কমায়,মস্তিষ্ককে শান্ত ও প্রশান্ত রাখতে সহায়তা করে।

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত ১০টি গুরুত্বপূর্ণ গাছ শরীরের ক্লান্তি ও দুর্বলতা কমায়।দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতার পর শরীর পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে।যৌনস্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী পুরুষ ও নারী উভয়ের যৌন ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।প্রাকৃতিক কামোদ্দীপক হিসেবে কাজ করে।এবং শ্বাসকষ্ট ও কাশি কমাতে উপকারী।প্রস্রাবের জ্বালা ও কিডনির সমস্যা উপশমে কার্যকর।

ব্যবহারের নিয়ম:

শতাবরি সাধারণত গুঁড়ো, চূর্ণ, সিরাপ বা ক্যাপসুল আকারে খাওয়া হয়।তবে সঠিক ডোজ ও ব্যবহার জানতে আয়ুর্বেদবিশেষজ্ঞ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।

সতর্কতা:

✔ গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে অতিরিক্ত সেবন এড়ানো উচিত।
✔ যাদের এলার্জি আছে, তারা প্রথমে অল্প পরিমাণে ব্যবহার করে দেখবেন।
✔ ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে পারে, তাই সতর্ক থাকতে হবে।

পিপুল গাছের উপকারিতা সম্পর্কে  জেনে নিন

 পিপুল গাছ শুধু একটি গাছ নয় এটি আয়ুর্বেদ, ইউনানি এবং লোকজ চিকিৎসায় বহু শতাব্দী ধরে ঔষধি ও আধ্যাত্মিক গুণের জন্য পরিচিত। শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা কমায়ঃ পাতা, ছাল ও ফল কাশি, হাঁপানি এবং সর্দি প্রশমনে সহায়ক।ছাল ও পাতার রস রক্তের অশুদ্ধি দূর করতে ব্যবহৃত হয়।পাতার গুঁড়া বা ছালের ক্বাথ পেটের সমস্যা কমাতে সহায়তা করে।

পাতার বা ছালের ক্বাথ জ্বর কমাতে ব্যবহৃত হয়।গাছের ছায়ায় ধ্যান ও প্রার্থনা করলে মন শান্ত হয়, স্ট্রেস কমে।দিনে ও রাতে অক্সিজেন নির্গত করে, যা খুব কম গাছের বৈশিষ্ট্য।বৌদ্ধ, হিন্দু ও জৈন ধর্মে পবিত্র গাছ হিসেবে পূজিত।এবং ধুলো ও ক্ষতিকর গ্যাস শোষণ করে।পাখি, বাদুড় ও অন্যান্য জীবের জন্য খাদ্য ও বাসস্থানের উৎস।

ব্যবহারের নিয়ম:

পাতা থেকে রস বের করে তা সকালে খালি পেটে পান করা হয় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য।পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করলে তা কফ বা সর্দি কমাতে গরম পানি দিয়ে খাওয়া যেতে পারে।পাতা ধুয়ে পরিষ্কার করে ব্যবহার করতে হবে।রস একবারে মাত্র কয়েক ফোঁটা থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে বাড়াতে হবে।ছাল শুকিয়ে গুঁড়ো করা হয়, তারপর কাশির জন্য গরম পানি বা দুধে মিশিয়ে খাওয়া হয়।

⚠ সতর্কতা:

 পিপুল গাছের ঔষধি ব্যবহার অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসক বা আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া উচিত। কারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। 

অ্যালোভেরা (ঘৃতকুমারী) গাছের উপকারিতা সম্পর্কে  জেনে নিন 

 ত্বকের যত্নে: অ্যালোভেরা জেল ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে, চুলকানি, ফোস্কা, দাগ-ছাপ কমাতে কার্যকর। ত্বকের জ্বালা ও পোড়া কমায়।মাথার ত্বকের খুশকি ও চুল পড়া কমাতে অ্যালোভেরা খুব উপকারী। চুলের বৃদ্ধিও ত্বরান্বিত করে।অ্যালোভেরা জুস খেলে হজম ভালো হয়, পাচনতন্ত্র সুস্থ থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

অ্যালোভেরা রক্ত বিশুদ্ধ করতে সাহায্য করে, শরীরের টক্সিন বের করে।অ্যালোভেরায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।মাড়ির সমস্যা ও মুখের ঘা কমাতে অ্যালোভেরা ভালো,মাউথওয়াশ হিসেবে ব্যাবহার হয়।অ্যালোভেরা পেস্ট ঘষলে ব্যথা ও ফোলা কমে, জ্বর নেমে আসে।তে ভিটামিন এ, সি, ই ও নানা খনিজ থাকে যা শরীরকে শক্তি দেয়।

ব্যবহারের নিয়ম:

✔ গাছ থেকে তাজা পাতা কেটে জেল করে তকে লাগান।
✔ দিনে ১-২ বার প্রয়োগ করলে চুলকানি, ফোস্কা, ব্রণ ইত্যাদি কমে।
✔ মুখের ত্বকে মাস্ক হিসেবে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
✔ অ্যালোভেরা জেল মাথায় লাগিয়ে ২৫-৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করুন।
✔ সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহারে খুশকি কমে এবং চুল শক্ত হয়।

⚠ সতর্কতা:

শিশুদের ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।গর্ভাবস্থায় অ্যালোভেরা ব্যবহারে সতর্ক থাকা উচিত, বিশেষ করে জুস আকারে খাওয়ার ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।অ্যালোভেরা জুস বেশি খেলে পেট ব্যথা, ডায়রিয়া বা এলার্জির সমস্যা হতে পারে।

আরজুন গাছের উপকারিতা সম্পর্কে  জেনে নিন 

আরজুনের ছাল হৃদযন্ত্রের জন্য খুব উপকারী। এটি হার্ট ফেইলিউর, কিডনি সমস্যা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।আরজুনের বিভিন্ন অংশ রক্ত শুদ্ধ করতে সাহায্য করে এবং শরীরের টক্সিন দূর করে।আরজুনে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা কোষ ক্ষয় রোধ করে এবং বার্ধক্যপ্রতিকারক।আরজুনের গাছের ছাল বা পাতা থেকে তৈরি কফির মতো পানীয় পাকস্থলীর সমস্যায় উপকার করে।

আরজুনের গুঁড়া ও তেল জোড় বা অর্থরাইটিসের ব্যথা উপশমে সাহায্য করেআরজুনের তেল চুল পড়া কমায়, চুল মজবুত করে এবং ত্বকের প্রদাহ ও দাগ কমায়।এবংআরজুনের ছাল থেকে তৈরি গুঁড়া দাঁতের যন্ত্রণায় উপকারি এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর করে।এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিভাইরাল গুণ শরীরকে রোগ থেকে বাঁচায়।

ব্যবহারের নিয়ম:

আরজুনের ছাল শুকিয়ে গুঁড়া করে নিন। ১ চা চামচ গুঁড়া এক কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে দিন। ৫-১০ মিনিটঢেকে রাখুন। তারপর ছেঁকে দিন।দিনে ১-২ বার খাবেন, খাবার আগে বা পরে।সকালে এবং রাতে ।হার্ট সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ ও অ্যাসিডিটি কমাতে।

⚠ সতর্কতা:

হার্ট, কিডনি বা অন্য কোনো গুরুতর রোগ থাকলে, গর্ভবতী বা স্তনপানকারী মহিলাদের অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করতে হবে।যদি ব্যবহারের পর ত্বকে লালচে ভাব, চুলকানি, শ্বাসকষ্ট বা অন্য কোনো অস্বস্তি হয়, তাহলে ব্যবহার বন্ধ করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।ছোট বাচ্চাদের জন্য আরজুনের ব্যবহার সাধারণত নিরাপদ নয়, বিশেষজ্ঞ পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করবেন না।

দারুচিনি গাছের উপকারিতা সম্পর্কে  জেনে নিন

দারুচিনি রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, তাই এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।দারুচিনি খেলে হজম শক্তি বাড়ে এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমে।এতে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরের কোষগুলোকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।দারুচিনি ত্বকের জন্য জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে এবং চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে।দারুচিনি মেটাবলিজম বাড়ায়, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।

ব্যবহারের নিয়ম:

দিনে  ১-২ থেকে ১ চা চামচ দারুচিনি গুঁড়া খাওয়া যায়। বেশি মাত্রায় খেলে পেটের সমস্যা বা অ্যালার্জি হতে পারে।দারুচিনি গরম দুধ, চা বা গরম পানীয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে স্বাদও ভালো লাগে ও উপকারও বেশি হয়। সপ্তাহে ২-৩ দিন খেতে পারেন। 

⚠ সতর্কতা:

গর্ভবতী বা দুধ খাওয়ানো মায়েদের বেশি দারুচিনি খাওয়া উচিত নয়, আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।যদি কোনো অ্যালার্জি বা ত্বকে সমস্যা হয়, তৎক্ষণাৎ ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।

শতমূলী গাছের কি কি  উপকারিতা সম্পর্কে  জেনে নিন

শতমূলী গাছের বিভিন্ন অংশ, বিশেষ করে শিকড়, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।এটির অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ভাইরাল গুণ থাকার কারণে শরীরের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।শরতূলী পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।শরমূলী রক্তকে বিশুদ্ধ এবং শুদ্ধ করে, যা ত্বক সুস্থ ও সুন্দর রাখতে সহায়ক।

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত ১০টি গুরুত্বপূর্ণ গাছ এই গাছের উপাদান হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, পেটের সমস্যায় উপশম দেয়।চর্মরোগ, একজিমা, ফুসকুড়ি ইত্যাদি ত্বকের সমস্যায় শরমূলী গাছের ব্যবহার উপকারী।রমূলী রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।দৈনন্দিন ক্লান্তি দূর করে শরীরকে শক্তিশালী করে তোলে।মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।

ব্যবহারের নিয়ম:

শতমূলীর শিকড় বা পাতার ছোট টুকরা নিয়ে চা বানিয়ে দিনে ১ বার পান করা যেতে পারে। এতে দেহের বিভিন্ন সংক্রমণ কমে।শতমূলীর শিকড় থেকে রস বের করে দিনে ১-২ চামচ খাওয়া যায়। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও শক্তি যোগাতে সাহায্য করে।

⚠ সতর্কতা:

গর্ভবতী মহিলারা, ছোট বাচ্চারা এবং যাদের কোনো বিশেষ রোগ আছে, তারা ব্যবহারের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।

তেজপাতা গাছের কি কি  উপকারিতা সম্পর্কে  জেনে নিন

তেজপাতা গাছের উপকারিতা অনেক,তেজপাতা রান্নায় ব্যবহার করা হয় খাবারের স্বাদ ও গন্ধ ভালো করার জন্য। বিশেষ করে তরকারি, মাংস, ভাত ও স্যুপে ব্যবহৃত হয়।তেজপাতা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে, বদহজম ও গ্যাসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।বদহজম, অ্যাসিডিটি, পেট ফাঁপা ইত্যাদি সমস্যায় তেজপাতা চায়ের মতো ব্যবহার করা যেতে পারে।

তেজপাতার গন্ধ শ্বাসকষ্ট, সর্দি, কাশি কমাতে সাহায্য করে।তেজপাতার গাছ বা পাতা ঘরের পাশে থাকলে মশা বা অন্য কীটপতঙ্গ কমে।তেজপাতার রস বা পেস্ট মুখের ত্বক পরিষ্কার ও ফাঙ্গাল সংক্রমণ থেকে মুক্ত রাখতে সাহায্য করে।তেজপাতার নির্দিষ্ট অংশ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।তেজপাতা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক বলে কিছু গবেষণায় উল্লেখ পাওয়া গেছে।

ব্যবহারের নিয়ম:

✔ রান্নার শুরুতেই ২-৩টি শুকনো বা তাজা তেজপাতা দিয়ে দিন।
✔ যেমন: ডাল, মাংস, স্যুপ বা ভাতের মধ্যে দিতে পারেন ইচ্ছা মত দিন।
✔ রান্নার শেষে তেজপাতা বের করে ফেলুন, কারণ সরাসরি খেলে এর গঠন খারাপ লাগতে পারে।
✔ তেজপাতা ভাজা বা গরম পানিতে ফুটিয়ে পান করুন।দিনে ১-২ বার পান করলে গ্যাস ও পেট ফাঁপা কমে।
✔ গরম পানিতে তেজপাতা ফুটিয়ে সেই ভাপ নিন।
✔ এতে শ্বাসকষ্ট ও সর্দি কমাতে সাহায্য করবে।

⚠ সতর্কতা:

✔ তেজপাতা ব্যবহারে অতি মাত্রায় ক্ষতিকর হতে পারে, তাই নিয়ম মেনে ব্যবহার করা উচিত।
✔ কোনো এলার্জি বা অস্বস্তি হলে ব্যবহার বন্ধ করুন এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

শেষ কথাঃ 

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত ১০টি গুরুত্বপূর্ণ গাছ। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় এই গাছগুলি প্রাকৃতিক ও বহুমুখী ঔষধ হিসেবে কাজ করে, যা শরীর ও মনের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।তবে, আয়ুর্বেদিক ঔষধ গ্রহণের আগে অবশ্যই একজন যোগ্য আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত, যাতে সর্বোত্তম এবং নিরাপদ ফলাফল পাওয়া যায়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জ্যাম ফ্লোরা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url