রাজশাহীর বিখ্যাত দর্শনীয় স্থানসমূহ

 রাজশাহীর বিখ্যাত দর্শনীয় স্থানসমূহ নাম সহ ব্যাখা করে নিচে লিখে দেওয়া হলঃ


বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত রাজশাহী জেলা ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিক্ষা, প্রকৃতি আর শিল্পের এক অনন্য মিলনস্থল। পদ্মা নদীর তীরবর্তী এই অঞ্চল ‘সিল্কসিটি’ এবং ‘আমের রাজধানী’ নামে সারাদেশে বিখ্যাত। শুধু ইতিহাসপ্রেমী নয়, প্রকৃতি প্রেমিক ও ভ্রমণপিপাসুদের জন্যও রাজশাহী এক অপার বিস্ময়ের নাম।


১০ টি  রাজশাহীর বিখ্যাত দর্শনীয় স্থানসমূহঃ 


১. পদ্মা নদীর তীর

রাজশাহীর সৌন্দর্যের মূল আকর্ষণ পদ্মা নদী। প্রতিদিন সন্ধ্যার সময় পদ্মা নদীর তীরে হাজারও মানুষ ভিড় জমায় সূর্যাস্তের অপূর্ব দৃশ্য উপভোগ করতে। এই নদীর পাড়জুড়ে আছে ওয়াকওয়ে, বসার জায়গা, নান্দনিক সৌন্দর্য। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে হিম বাতাস আর শীতল পরিবেশ মন প্রশান্ত করে দেয়। পদ্মা নদী বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি নদী, যা দেশের ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। পদ্মা নদীর তীর বলতে বোঝায় নদীর দু’পাশে বিস্তৃত ভূমি, যা বিভিন্নভাবে মানুষের জীবন ও প্রকৃতিকে প্রভাবিত করে। পদ্মা নদীর তীর সাধারণত বালুময়, পলিমাটিতে ভরপুর এবং উর্বর ভূমি হিসেবে পরিচিত। এই তীরবর্তী অঞ্চলে কৃষিকাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ প্রতিবছর পদ্মার পানি এবং বন্যার সঙ্গে আসা পলি মাটি জমিকে উর্বর করে তোলে। বিশেষ করে ধান, পাট, গম, সরিষা, এবং সবজি চাষের জন্য পদ্মার তীরবর্তী জমি অত্যন্ত উপযোগী।

বিশেষত্ব: পদ্মার পাড়ে হাঁটাহাঁটি, বাইসাইকেল চালানো, নৌকায় ঘুরে বেড়ানো এবং সূর্যাস্ত উপভোগ করার আদর্শ জায়গা।


২. বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর 

বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর (Varendra Research Museum) বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন এবং ঐতিহাসিক জাদুঘর। এটি রাজশাহী শহরের হৃদপিণ্ডে অবস্থিত এবং দেশের পুরাতত্ত্ব, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও প্রত্নতত্ত্ব গবেষণার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে। বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯১০ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর। এটি প্রতিষ্ঠার মূল উদ্যোক্তা ছিলেন রাজশাহীর জমিদার পরিবারের সদস্য ও শিক্ষানুরাগী অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়, রামপ্রসাদ চক্রবর্তী এবং সারতীচরণ রায়। মূলত বরেন্দ্র অঞ্চলের (উত্তর-পশ্চিম বাংলাদেশ) পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন সংরক্ষণ ও গবেষণার লক্ষ্যেই এই জাদুঘরের জন্ম।

বিশেষত্ব: এখানে আপনি গৌড়ীয়, পাল, সেন, বৌদ্ধ ও হিন্দু যুগের শিল্প ও নিদর্শনের সাথে পরিচিত হতে পারবেন। ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য এটি স্বর্গ।

পেজ সূচি পত্র ঃ

রাজশাহীর দর্শনীয় স্থান
 রাজশাহীর ঐতিহাসিক স্থান
◾ রাজশাহীর বিখ্যাত জায়গা
◾ রাজশাহীর পর্যটন কেন্দ্র
◾ রাজশাহীর রাজবাড়ি ও মন্দির
◾ রাজশাহীর দর্শনীয় স্থান তালিকা
 রাজশাহী ভ্রমণের জায়গা
◾ রাজশাহীর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন
 রাজশাহীর বড় কুঠি ভ্রমণ
◾ রাজশাহীর পদ্মা নদীর তীর

৩. শহীদ কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা

রাজশাহীর অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র হলো শহীদ কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা। এটি স্থানীয়ভাবে "রাজশাহী চিড়িয়াখানা" নামেও পরিচিত। রাজশাহীর মনোরম পরিবেশে অবস্থিত এই উদ্যানটি শুধু বিনোদনের জন্য নয়, প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণীর সংরক্ষণ এবং সচেতনতা বৃদ্ধির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এটি রাজশাহী মহানগরীর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এবং প্রতিদিনই দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। এখানে রয়েছে ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের প্রাণী, হাঁস-মুরগি, হরিণ, ভালুক, বানরসহ আরও অনেক প্রাণী। শিশুরা এখানে ভীষণ আনন্দ পায়।

ইতিহাস ও নামকরণ:

এই উদ্যানটির নামকরণ করা হয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামানের নামে। তিনি রাজশাহীর কৃতি সন্তান এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন। তাঁর স্মৃতিকে অম্লান রাখতে এবং রাজশাহীর জনগণের বিনোদনের ব্যবস্থা করার লক্ষ্যে এই উদ্যান ও চিড়িয়াখানার উন্নয়ন করা হয়। 

অবস্থান:

উদ্যানটি প্রায় ৩৩ একর জমির ওপর বিস্তৃত।

৪. রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (RU)

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৩ সালের ৬ই জুলাই। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর চাপ কমানোর লক্ষ্যে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়টি মাত্র কয়েকটি বিভাগ ও অনুষদ নিয়ে যাত্রা শুরু করে, যা বর্তমানে বিস্তৃত আকার ধারণ করেছে। 

অবস্থান:

বিশ্ববিদ্যালয়টি রাজশাহী শহরের পাশে, পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত। এর পুরো ক্যাম্পাসের আয়তন প্রায় ৭৫৩ একর, যা বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে পড়ে।

বিশেষত্ব: বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চ, শহীদ মিনার, গ্রন্থাগার, পদ্মার পাড় ও লেক ভ্রমণকারীদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করে।


৫. বাঘা মসজিদ

বাঘা মসজিদ বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক ও প্রাচীন মসজিদ। এটি বাংলাদেশের অন্যতম সুলতানি আমলের নিদর্শন, যা শিল্প, সংস্কৃতি ও স্থাপত্যের এক অসাধারণ ঐতিহ্য বহন করে।

নির্মাণকাল ও ইতিহাস:

বাঘা মসজিদটি নির্মাণ করেন সুলতান নাসিরউদ্দিন নসরাত শাহ। এটি ১৫২৩-২৪ খ্রিস্টাব্দে (৯৩০ হিজরি) নির্মিত। সুলতানি আমলে বাংলার মুসলিম স্থাপত্যের যে অনন্য দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়, বাঘা মসজিদ তার অন্যতম। এটি মূলত ধর্মীয় উপাসনা ও শিক্ষার কেন্দ্র ছিল।

 দর্শনীয়তা:

● বাঘা মসজিদ শুধু ধর্মীয় উপাসনার স্থান নয়, এটি ঐতিহাসিক পর্যটনকেন্দ্র হিসেবেও খ্যাত।
● প্রতি বছর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার সময় হাজার হাজার মুসল্লি এখানে নামাজ আদায় করতে আসেন।
●মসজিদের আশেপাশে রয়েছে ঐতিহাসিক পুকুর, কবরস্থান ও দর্শনীয় স্থান।
● এটি রাজশাহীর অন্যতম প্রাচীন নিদর্শন এবং বাংলাদেশের জাতীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত।

৬. পুঠিয়া রাজবাড়ি ও মন্দির সমূহ

পুঠিয়া রাজবাড়ি ও মন্দিরসমূহ বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার ঐতিহাসিক এবং স্থাপত্যিকভাবে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। এটি রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রাচীন মন্দির ও রাজবাড়ি কমপ্লেক্সগুলোর একটি।

ইতিহাস

পুঠিয়া রাজবাড়ি নির্মাণ শুরু হয়েছিল ১৭ শতকের শুরুর দিকে। এই রাজপরিবারটি ছিল রাজশাহীর জমিদার শ্রেণির অংশ, যারা বৃটিশ আমলে অত্যন্ত প্রভাবশালী ছিলেন। পুঠিয়ার জমিদার বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ভ্রাতৃগণ রাণা এবং অনন্ত দেব রায়। মূল রাজবাড়ি এবং এর আশপাশের কাঠামো তৈরি হয়েছে মোগল, ইউরোপীয় এবং বাংলার দেশীয় স্থাপত্যের সংমিশ্রণে।

বিশেষত্ব: বড় একটি দীঘি বা পুকুরকে কেন্দ্র করে রাজবাড়ি নির্মিত। রাজবাড়ির ভেতরে বিভিন্ন ভবন, সভাকক্ষ, বিশ্রামাগার ও মন্দির রয়েছে। স্থাপত্যে লাল ইট, টেরাকোটা অলঙ্করণ এবং কারুকাজ চোখে পড়ে।রাজবাড়ির প্রধান ভবনটি তুলনামূলকভাবে ইউরোপীয় ধাঁচের, তবে স্থানীয় ঐতিহ্যের ছাপও রয়েছে।


৭. আমের বাগান

রাজশাহী আমের জন্য বিখ্যাত। বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের এই জেলা দেশের "আমের রাজধানী" নামেও পরিচিত। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া আম চাষের জন্য খুবই উপযোগী, ফলে প্রতি বছর রাজশাহীতে প্রচুর আম উৎপাদন হয়। রাজশাহীর আম শুধু স্বাদে নয়, আকার, রঙ এবং গুণগত মানেও অনন্য। হিমসাগর, ল্যাংড়া, ফজলি, গোপালভোগ, আশ্বিনা, আম্রপালি — এসব সুস্বাদু জাতের আম রাজশাহীতে চাষ হয়। দেশের ভেতরে এবং বিদেশেও রাজশাহীর আমের চাহিদা অনেক বেশি। প্রতি বছর আমের মৌসুমে রাজশাহী অঞ্চলে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। এখানকার আম দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে এবং অনেক মানুষ আমের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। বিশেষ করে রাজশাহী আম কোনো প্রকার ক্ষতিকর রাসায়নিক ছাড়া নিরাপদভাবে উৎপাদনের জন্যও বিখ্যাত।

বিশেষত্ব: আমের মৌসুমে রাজশাহীতে এসে সরাসরি বাগান থেকে আম খাওয়ার অভিজ্ঞতা অনন্য। দেশের সেরা স্বাদের আম এখান থেকে সংগ্রহ করা যায়।


৮. বড় কুঠি (Dutch Silk Factory)

১৭৮১ সালে স্থাপিত বড় কুঠি একসময় ছিল ডাচ ব্যবসায়ীদের সিল্ক কারখানা। বর্তমানে এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের আওতাধীন। পুরনো ইউরোপীয় স্থাপত্যশৈলী দেখা যায় এই ভবনে। বড় কুঠি বলতে বোঝানো হয় রাজশাহীর ঐতিহাসিক এক প্রাচীন বিশাল ইটের ভবন বা ভবনের অংশ, যা বিভিন্ন সময় শাসন, প্রশাসন বা ব্যবসায়িক কার্যক্রমের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। বাংলার বাংলার বিভিন্ন জায়গায় এই ধরনের কুঠি বা কোর্টিং হাউস থাকত, যেখানে জमीদার বা ব্যবসায়ীরা তাঁদের কাজকর্ম পরিচালনা করতেন।

বিশেষত্ব: ঐতিহাসিক গুরুত্ব আর দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য মিলিয়ে এটি পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় জায়গা। পুরনো স্থাপত্যশৈলী ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানার সুযোগ। শিক্ষার্থীদের জন্য ঐতিহাসিক গবেষণার উৎকৃষ্ট স্থান।

বর্তমান অবস্থা:

● বড় কুঠি বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অন্তর্ভুক্ত
 এটি বর্তমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, যেখানে চারুকলার শিক্ষার্থীরা চিত্রাঙ্কন, ভাস্কর্য, ●নকশা ও অন্যান্য শিল্পকর্ম নিয়ে কাজ করে।
●ভবনের আশপাশে চারুকলা অনুষদের নতুন ভবন, কর্মশালা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
●বিভিন্ন সময়ে বড় কুঠি সংস্কার ও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও আরও উন্নত রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে।
● বড় কুঠির ঐতিহাসিক ভবনের পুরোনো স্থাপত্যরূপ অনেকটাই সংরক্ষিত আছে।
● বড় কুঠি প্রাঙ্গণে পদ্মা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়, তাই এটি দর্শনার্থীদের জন্যও জনপ্রিয় স্থান।


👉আরও পড়ুন: রাজশাহীর জনপ্রিয় উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: বাংলাদেশের সবুজ ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য
রাজশাহীর বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর: প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের ভাণ্ডার

৯. রাজশাহী নিউ গভর্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজ

রাজশাহী নিউ গভর্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজ বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী ও সরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি মূলত সাধারণ ডিগ্রি প্রদানকারী একটি কলেজ হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক (পাস) ও সম্মান (অনার্স) পর্যায়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। রাজশাহী শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এই কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৬ সালে। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পূর্ব সময়ের শিক্ষা বিস্তারের ধারাবাহিকতায় গড়ে ওঠা অন্যতম সরকারি কলেজ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন এই কলেজটি রাজশাহী অঞ্চলে উচ্চশিক্ষার বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বিশেষত্ব: শিক্ষা, ইতিহাস ও স্থাপত্য প্রেমীদের জন্য মনোরম স্থান।

বর্তমান অবস্থা:

কলেজটি বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত।
এখানে উচ্চ মাধ্যমিক, ডিগ্রি ও অনার্স কোর্স চালু আছে।
বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা সহ বিভিন্ন বিভাগে পাঠদান হচ্ছে।
শিক্ষার মান আগের তুলনায় অনেক উন্নত হয়েছে, তবে আরও আধুনিক সুযোগ-সুবিধার প্রয়োজন রয়েছে।

১০. সিল্ক ফ্যাক্টরি

বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহাসিক এবং শিল্প-সংস্কৃতির পরিচায়ক একটি প্রতিষ্ঠান। এটি রাজশাহী জেলার অন্যতম বিখ্যাত শিল্পকারখানা, যা মূলত সিল্ক বা রেশম উৎপাদনের জন্য পরিচিত। রাজশাহীকে বাংলাদেশের "সিল্ক সিটি" বা "রেশম নগরী" বলা হয়ে থাকে, আর এর মূল কারণ হলো এই অঞ্চলে সিল্ক শিল্পের ঐতিহ্য এবং রাজশাহী সিল্ক ফ্যাক্টরির অবদান।প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬১ সালে রাজশাহী সিল্ক ফ্যাক্টরি সরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। নীয়ভাবে উন্নতমানের সিল্ক বা রেশম উৎপাদন করা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে।

অবস্থান: রাজশাহী নগরীর শিরোইল এলাকায় অবস্থিত।

কার্যক্রম: মূলত কোকুন বা গুটি থেকে সুতা তৈরি করা হয়।সেই সুতা থেকে উন্নতমানের কাপড় বোনা হয়। রাজশাহী সিল্ক ফ্যাক্টরির উৎপাদিত কাপড় দিয়ে শাড়ি, পাঞ্জাবি, থ্রিপিস, ওড়না, কুর্তা ইত্যাদি তৈরি করা হয়।

বৈশিষ্ট্য:

রাজশাহী সিল্ক অত্যন্ত মসৃণ, কোমল এবং ঝলমলে।
এই সিল্ক দিয়ে তৈরি পোশাক দেশের অভ্যন্তরে এবং বিদেশে জনপ্রিয়।
রাজশাহীর মুলবেরি (Mulberry) জাতের সিল্ক সবচেয়ে উন্নতমানের বলে বিবেচিত।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব:

একসময় এই ফ্যাক্টরিতে প্রচুর লোকের কর্মসংস্থান হতো।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এটি জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

শেষ কথাঃ

রাজশাহী শুধু ইতিহাসের শহর নয়, এটি প্রকৃতি, সংস্কৃতি, শিক্ষা আর শিল্পের প্রাণকেন্দ্র। যদি আপনি প্রকৃতি দেখতে, ইতিহাস জানতে, কিংবা আমের স্বাদ নিতে ভালোবাসেন—তাহলে রাজশাহী হবে আপনার পরবর্তী ভ্রমণের সেরা গন্তব্য। রাজশাহীর প্রতিটি জায়গায় রয়েছে ইতিহাসের গল্প, নান্দনিক সৌন্দর্য এবং অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা।  তাই দেরি না করে রাজশাহীতে ঘুরে আসুন আর প্রাণভরে উপভোগ করুন বাংলার এক অনন্য ঐতিহ্যের শহর।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জ্যাম ফ্লোরা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url