লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের উপকারিতা ও খাবার নিয়ম

লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের  উপকারিতা  ও খাবার নিয়ম লজ্জাবতী গাছ, যার বৈজ্ঞানিক নাম (Mimosa pudica)এটি এক প্রকার ঔষধি গাছ। বাংলায় একে লজ্জাবতী, লজ্জালু, বা লাজুক লতা নামেও ডাকা হয়। 

আমাদের গ্রামবাংলার আঙিনায় এই গাছ প্রায়শই দেখা যায়, কিন্তু এর ভেতরে লুকিয়ে থাকা ঔষধিগুণ সম্পর্কে অনেকেই অজ্ঞ। বিশেষ করে, লজ্জাবতী গাছের শিকড় মানুষের দেহের নানা রোগ নিরাময়ে যুগ যুগ ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে আয়ুর্বেদ ও লোকজ চিকিৎসায়।

পেজ সূচি পত্রঃ লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের  উপকারিতা  ও খাবার নিয়ম

লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের  উপকারিতা  ও খাবার নিয়ম
গর্ভাশয়ের সমস্যা নিরাময়ে লজ্জাবতী শিকড়ের  উপকারিতা
অর্শ বা পাইলসের উপশমে লজ্জাবতী শিকড়ের  উপকারিতা
প্রস্রাবের সমস্যা দূর করে লজ্জাবতী শিকড়ের  উপকারিতা
শারীরিক দুর্বলতা কমায় লজ্জাবতী শিকড়ের  উপকারিতা
মানসিক ও স্নায়বিক লজ্জাবতী শিকড়ের  উপকারিতা
বিষ নাশক ও জীবাণুনাশক লজ্জাবতী শিকড়ের  উপকারিতা
স্নায়ুর অসুস্থতায়  লজ্জাবতী শিকড়ের  উপকারিতা
দাঁতের সমস্যা নিরাময়ে লজ্জাবতী শিকড়ের  উপকারিতা
শেষ কথা: লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের  উপকারিতা  ও খাবার নিয়ম

গর্ভাশয়ের সমস্যা নিরাময়ে লজ্জাবতী শিকড়ের  উপকারিতা০২

লজ্জাবতী গাছ (Mimosa pudica) আয়ুর্বেদ ও লোকজ চিকিৎসায় বহু প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষ করে গর্ভাশয়ের (uterus) নানা সমস্যার ক্ষেত্রে এর শিকড় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বলে লোকজ ও প্রাকৃতিক চিকিৎসায় বিশ্বাস করা হয়। ঋতুস্রাব নিয়ন্ত্রণ গর্ভাশয়ের অতিরিক্ত রক্তপাত বা অনিয়মিত মাসিক চলাকালীন লজ্জাবতী শিকড়ের গুঁড়ো দুধের।

সঙ্গে মিশিয়ে খেলে রক্তপাত কমাতে সাহায্য করে এবং মাসিক নিয়মিত হয়। শিকড়ের ঔষধি গুণ জরায়ুর পেশি শক্তিশালী করে, যার ফলে জরায়ু দুর্বলতা, ঝুলে থাকা বা নড়বড়ে হওয়ার সমস্যা কমে।শ্বেতস্রাব বা গর্ভাশয়ের অতিরিক্ত স্রাব কমাতে লজ্জাবতীর শিকড়ের নির্যাস অনেক ক্ষেত্রে কার্যকর। এই গাছের শিকড় প্রাকৃতিক উপায়ে হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে।

লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের  উপকারিতা  ও খাবার নিয়ম যা গর্ভাশয়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাশয়ে প্রদাহ ও সংক্রমণ থাকলে শিকড়ের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ উপশমে সাহায্য করে। গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী নারীরা নিজেই ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন করবেন। শিকড় থেকে নির্যাস তৈরি করে তা রক্তপাতকারী স্থানে ব্যবহার করলে রক্ত বন্ধ করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে গর্ভাশয়ের রক্তপাত বা মাসিককালীন অতিরিক্ত রক্তপাত নিয়ন্ত্রণে এই শিকড়ের ব্যবহার প্রচলিত। বিশেষ করে গর্ভাশয়ে অতিরিক্ত স্রাব বা সাদা স্রাব কাজ করে।

ব্যবহারের নিয়ম:

• লজ্জাবতী গাছের শিকড় ভালো করে ধুয়ে ছোট ছোট টুকরা করুন।
• এগুলো সিদ্ধ করে বা গরম পানি দিয়ে কষিয়ে নির্যাস তৈরি করুন।
• সেই নির্যাসটি বা তার বাষ্প গর্ভাশয় বা রক্তপাতস্থলে প্রয়োগ করলে রক্তপাত কমে।

 সতর্কতা:
• গর্ভবতী নারীদের এটি ব্যবহার নিষেধ (কারণ এটি জরায়ু সংকোচনে ভূমিকা রাখতে পারে)
• অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ না করাই ভালো।
• যেকোনো আয়ুর্বেদিক বা লোকজ ওষুধ ব্যবহারের আগে যোগ্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত

অর্শ বা পাইলসের উপশমে লজ্জাবতী শিকড়ের  উপকারিতা

রক্তস্রাবযুক্ত অর্শে লজ্জাবতীর শিকড় রক্তপাত বন্ধ করতে সাহায্য করে। এতে উপস্থিত প্রাকৃতিক ট্যানিন রক্ত জমাট বাঁধাতে সহায়তা করে। অর্শের সময় পায়ুপথের চারপাশে যে ফোলাভাব ও জ্বালা দেখা দেয়, শিকড়ের নির্যাস তা প্রশমিত করতে পারে। এতে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি (প্রদাহ-নাশক) গুণ থাকে। নিয়মিত সেবনে অর্শের গাঁঠ বা গুটি শুকিয়ে ছোট হয়ে যেতে শুরু করে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ফলে পুনরায় অর্শ হওয়ার আশঙ্কা কমে।

ব্যবহারের নিয়ম:

• লজ্জাবতীর শিকড় শুকিয়ে গুঁড়া করে নিন।
• প্রতিদিন সকালে ও রাতে সামান্য পরিমাণ (প্রায় ২-৩ গ্রাম) এক গ্লাস গরম পানিতে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
• ২-৩ টুকরো শিকড় এক কাপ পানিতে সিদ্ধ করে ছেঁকে নিয়ে সেই পানি খাওয়া যেতে পারে দিনে একবার।
সতর্কতা:
• গর্ভবতী মহিলা, শিশু বা যাদের অন্য জটিল রোগ আছে, তাদের ক্ষেত্রে এই ভেষজ ব্যবহার করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

প্রস্রাবের সমস্যা দূর করে লজ্জাবতী শিকড়ের  উপকারিতা

শিকড়ে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণাগুণ রয়েছে, যা মূত্রনালীর সংক্রমণ রোধে সাহায্য করে। লজ্জাবতীর শিকড় কিডনির কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করে এবং অতিরিক্ত প্রস্রাবের প্রবণতা কমাতে সহায়ক হতে পারে শিকড়ের রস বা গুঁড়া ঠান্ডা প্রকৃতির হওয়ায় প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া উপশমে কার্যকর হতে পারে। লোকজ চিকিৎসায় বিশ্বাস করা হয়, লজ্জাবতী শিকড় প্রস্রাবে রক্ত গেলে উপকার করে।

ব্যবহারের নিয়ম:

• শিকড় ভালো করে ধুয়ে বেটে তার রস বের করে খালি পেটে ১-২ চা চামচ পান করা যেতে পারে, দিনে ১-২ বার (জলে মিশিয়ে)।
• শুকনো শিকড় গুঁড়া করে ১/২ চা চামচ হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।

সতর্কতা:

• গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

শারীরিক দুর্বলতা কমায় লজ্জাবতী শিকড়ের  উপকারিতা

লজ্জাবতী গাছের শিকড় পুরুষদের যৌন দুর্বলতা (যেমন – দ্রুত বীর্যপাত, লিঙ্গ শিথিলতা) কমাতে সহায়ক হতে পারে বলে লোকজ বিশ্বাস আছে। এটি শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং যৌনশক্তি বাড়াতে ভূমিকা রাখতে পারে বলে আয়ুর্বেদে উল্লেখ আছে। লজ্জাবতী গাছের শিকড়ে এমন কিছু প্রাকৃতিক যৌগ (alkaloids, tannins, flavonoids) আছে, যেগুলো দেহে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কাজ করে। 

লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের  উপকারিতা  ও খাবার নিয়ম এটি দেহকে শক্তি দিতে সাহায্য করতে পারে, বিশেষ করে।শিকড়ের নির্যাস স্নায়ু শান্ত করতে পারে। যার ফলে ঘুম ভালো হয় এবং মানসিক শান্তি আসে যা পরোক্ষভাবে দেহকে পুনরুজ্জীবিত করে।  লোকজ মতে, লজ্জাবতীর শিকড় পুরুষদের জন্য টনিক হিসেবে কাজ করতে পারে। অনেক গ্রাম্য হেকিম এটি যৌন দুর্বলতার চিকিৎসায়ও ব্যবহার করেন। 

শিকড়ের নির্যাস বা গুঁড়া নিয়মিত সেবনে কিছু ভেষজ চিকিৎসকের মতে, শারীরিক বল বা স্ট্যামিনা বাড়ে এবং দুর্বলতা কমে। গবেষণায় দেখা গেছে লজ্জাবতীতে কিছু প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ফ্ল্যাভোনয়েড আছে, যা হরমোন ব্যালেন্স রাখতে সহায়তা করে – ফলে শরীরের সামগ্রিক দুর্বলতা কাটাতে সহায়তা করতে পারে।

ব্যবহারের নিয়ম:

• শুকনো শিকড় গুঁড়া করে সকালে খালি পেটে ১ চা চামচ গরম দুধ বা মধুর সাথে খাওয়া হয়।
• কখনও কখনও পানি দিয়ে ফুটিয়ে ডেকোশন (জলনিসৃত রস) তৈরি করে পান করা হয়।

সতর্কতা:

• গর্ভবতী মহিলা, শিশু ও কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার নিরাপদ নয়।
• মাত্রাতিরিক্ত গ্রহণে বমি, পেটব্যথা, অথবা বিষক্রিয়ার আশঙ্কা থাকতে পারে।

  মানসিক ও স্নায়বিক লজ্জাবতী শিকড়ের  উপকারিতা

 লজ্জাবতী গাছের শিকড়ে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান (যেমন অ্যালকালয়েড ও ট্যানিন) মস্তিষ্ককে প্রশমিত করে। এটি স্নায়ুর উত্তেজনা কমিয়ে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।ঘুমের সমস্যায় উপকারী: শিকড়ের রস বা গুঁড়ো প্রাকৃতিক ঘুমের ওষুধ হিসেবে কাজ করে। অনিদ্রা বা ঘুমের অসুবিধা থাকলে এটি ঘুম আনতে সাহায্য করে।

শিকড় নিয়মিত সেবনে স্নায়ু শক্তিশালী হয়, মনঃসংযোগ বৃদ্ধি পায় এবং মাথাব্যথা, মাথা ঝিমঝিম করা ইত্যাদিতে উপকার পাওয়া যায়।এবংহিস্টেরিয়া বা মানসিক অস্থিরতা কমাতে শিকড়ের রস বা চূর্ণ ব্যবহার করা হয় আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায়।ও যাদের স্নায়ুর প্রদাহজনিত সমস্যা (যেমন নিউরাইটিস) আছে, তাদের জন্য লজ্জাবতী শিকড় কার্যকর হতে পারে।

ব্যবহারের নিয়ম:

• শিকড় শুকিয়ে গুঁড়ো করে দিনে ১-২ বার এক চা চামচ পরিমাণ গরম দুধ বা মধুর সাথে খাওয়া যেতে পারে।
• বা, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভেষজ মিশ্রণে ব্যবহার করা যেতে পারে।

সতর্কতা:

• গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীরা না খাওয়াই ভালো।
• অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে বমি বা পেটের সমস্যা হতে পারে।
• অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া দীর্ঘদিন ব্যবহার করবেন না।

বিষ নাশক ও জীবাণুনাশক লজ্জাবতী শিকড়ের  উপকারিতা

লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের  উপকারিতা  ও খাবার নিয়ম লজ্জাবতী গাছের শিকড় বিভিন্ন প্রকার বিষক্রিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর হিসেবে প্রাচীন আয়ুর্বেদ ও লোকজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। সাপ বা পোকামাকড়ের কামড়ে বিষক্রিয়া কমাতে শিকড় চিবিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হতো বা শিকড়ের রস প্রয়োগ করা হতো দেহে সঞ্চিত বিষাক্ত পদার্থ বের করে শরীরকে বিশুদ্ধ রাখে।

প্রস্রাবের রাস্তার জীবাণুজনিত ইনফেকশনেও লজ্জাবতী শিকড়ের ক্বাথ উপকারী হতে পারে। শিকড়ে অ্যান্টিসেপটিক উপাদান থাকে যা ক্ষত বা ঘায়ের জীবাণু ধ্বংস করে দ্রুত আরোগ্য সাধনে সাহায্য করে।ফোঁড়া, ফুসকুড়ি বা সংক্রমণজাত চর্মরোগে শিকড় বেটে লাগালে জীবাণু নষ্ট হয় এবং সংক্রমণ ছড়ায় না।

 সতর্কতা:

লজ্জাবতী গাছ প্রাকৃতিক ও উপকারী তবে যেকোনো ধরনের চিকিৎসায় ব্যবহারের আগে একজন অভিজ্ঞ আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক বা হাকিমের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যই প্রয়োজন।

স্নায়ুর অসুস্থতায়  লজ্জাবতী শিকড়ের  উপকারিতা

 লজ্জাবতী শিকড়ে রয়েছে সেডেটিভ (sedative) উপাদান, যা স্নায়ুকে শান্ত করে। ফলে মানসিক চাপ, উদ্বেগ, অতিরিক্ত উত্তেজনা ইত্যাদি কমে। এবং স্নায়ু দুর্বলতার কারণে যাদের ঘুম হয় না বা বারবার ঘুম ভেঙে যায়, তাদের জন্য লজ্জাবতী শিকড় কার্যকরী। এটি মস্তিষ্ককে শিথিল করে ঘুম সহজ করে তোলে। লজ্জাবতী শিকড় নিয়মিত সেবনে স্নায়ু শক্তিশালী হয়, মানসিক অবসাদ বা ক্লান্তি দূর হয়।

 লজ্জাবতী শিকড়ে থাকা কিছু ফাইটোকেমিক্যাল নিউরনের কার্যক্রম উন্নত করতে সাহায্য করে। ফলে স্মৃতিশক্তি ও মনঃসংযোগ বাড়ে। আয়ুর্বেদ মতে, পক্ষাঘাত বা স্ট্রোকজনিত স্নায়বিক সমস্যা মোকাবেলায় লজ্জাবতী শিকড়ের লেই বা ক্বাথ প্রয়োগ উপকারী হতে পারে।স্নায়বিক অস্থিরতা বা দুর্বলতা থেকে পেশীতে খিঁচুনি বা অবশ ভাব হলে, লজ্জাবতী শিকড়ের নির্যাস উপশমে সাহায্য করে।


ব্যবহারের নিয়ম:

• শুকনো শিকড় গুঁড়ো করে সকালে ও রাতে আধা চা চামচ মধু বা পানি দিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
• ক্বাথ বা ডেকোশন করে খাওয়া যায় (১০-১৫ গ্রাম শুকনো শিকড় ২-৩ কাপ পানিতে ফুটিয়ে ১ কাপ হলে নামিয়ে ছেঁকে খেতে হবে)।

 সতর্কতা:

• গর্ভবতী মা ও শিশুরা বা দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভোগা ব্যক্তিদের ব্যবহার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
• মাত্রাতিরিক্ত গ্রহণ করলে ক্ষতি হতে পারে।

দাঁতের সমস্যা নিরাময়ে লজ্জাবতী শিকড়ের  উপকারিতা

লজ্জাবতীর শিকড়ে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান দাঁতের স্নায়ুতে প্রশান্তি আনে।শিকড় গুঁড়া করে পেস্ট বানিয়ে ব্যথাযুক্ত স্থানে লাগালে ব্যথা কমে।শিকড়ের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণাগুণ মাড়ির জীবাণু ধ্বংস করে।এতে মাড়ির রক্তপাত, ফোলা বা ইনফেকশন কমে যায়, ঠান্ডা বা গরম খাওয়ার সময় দাঁতে লাগা সংবেদনশীলতা লজ্জাবতী শিকড় ব্যবহারে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসে।

দাঁতের পোকা প্রতিরোধে সহায়কের ক্ষেত্রে দাঁতের ক্ষয় ও পোকা রোধ করতে লজ্জাবতীর শিকড় গুঁড়ার ব্যবহার দন্তমজ্জার সুরক্ষা দেয়।মুখের দুর্গন্ধ দূর করে শিকড়ের প্রাকৃতিক গন্ধ ও জীবাণুনাশক গুণাগুণ মুখের দুর্গন্ধ কমাতে সাহায্য করে।প্রাকৃতিক এই উপাদানটি দাঁতের যত্নে সহায়ক হলেও যেকোনো দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা বা তীব্র ব্যথা থাকলে অবশ্যই দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ব্যবহারের নিয়ম:

• লজ্জাবতী শিকড় শুকিয়ে গুঁড়ো করে প্রতিদিন সকালে ও রাতে দাঁতের গোড়ায় লাগিয়ে ৫-৬ মিনিট রেখে কুলি করে ফেলুন।
• লজ্জাবতী শিকড় পানিতে সেদ্ধ করে সেই পানি ঠান্ডা করে কুলকুচি করলে মাড়ির রক্তপাত ও ব্যথা কমে।

 সতর্কতা:

• গর্ভবতী ও শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
• অতিরিক্ত ব্যবহার দাঁতের এনামেল ক্ষয় করতে পারে, তাই দিনে ১–২ বার যথেষ্ট।

শেষ কথা:
লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের  উপকারিতা  ও খাবার নিয়ম, লজ্জাবতী গাছের শিকড় প্রকৃতির একটি দুর্লভ উপহার, যা অনেক ধরনের রোগের প্রাকৃতিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে যেকোনো ভেষজ উপাদানের মতো, এটি ব্যবহারের আগে রোগের প্রকৃতি ও শরীরের অবস্থা বুঝে সঠিক নিয়মে ব্যবহার করা উচিত। প্রয়োজনে কোনো আয়ুর্বেদিক বা হেকিমি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে। নিয়মিত ও সচেতন ব্যবহারে লজ্জাবতী শিকড় হতে পারে আপনার সুস্বাস্থ্যের এক নির্ভরযোগ্য সহকারী। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জ্যাম ফ্লোরা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url